Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৫ মার্চ ২০২৩

বিনাসয়াবিন-৭

বিনাসয়াবিন-৭

জাতের নাম:

 

বিনাসয়াবিন-৭

জাতের বৈশিষ্ট্য:

 

  • গাছের উচ্চতা ৫০-৫৮ সে.মি.
  • প্রাথমিক শাখার সংখ্যা ৪-৫টি
  • প্রতি গাছে ফলের সংখ্যা ৪৫-৬০টি
  • বীজ মাঝারি আকারের এবং ১০০ বীজের ওজন ১২.০-১৪.০ গ্রাম
  • বীজে আমিষ, তেল এবং শর্করার পরিমাণ যথাক্রমে ৪৪.৫, ২০.০ এবং ২৭.০%

জীবনকাল যথাক্রমে ১০৫-১১০ দিন (রবি) এবং ৯৫-১০০ দিন (খরিফ-২)

জমি ও মাটি:

 

বিনাসয়াবিন-৭ জাতটি বেলে দো-আঁশ হতে এটেল দো-আঁশ মাটিতে চাষ করা যায়। খরিফ-২ বা বর্ষা মৌসুমের জন্য নির্বাচিত জমি অবশ্যই উঁচু ও পানি নিষ্কাশনযোগ্য হতে হবে। রবি মৌসুমে মাঝারী থেকে নিচু জমিতে চাষ করা যায়। দেশের সয়াবিন চাষাধীন এলাকায় জাতটি চাষের জন্য উপযোগী।

বপনের পদ্ধতি:

 

রবি ও খরিফ-২ উভয় মৌসুমেই সয়াবিন বপন করা যায়। রবি মৌসুমে পৌষের প্রথম থেকে মধ্য মাঘ (মধ্য ডিসেম্বর হতে জানুয়ারীর শেষ) পর্যন্ত এবং খরিফ-২ মৌসুমে শ্রাবনের প্রথম হতে ভাদ্র মাসের শেষ (মধ্য জুলাই মধ্য সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। খরিফ মৌসুমে উল্লিখিত সময়ের আগে বপন করলে ফুল আসতে কিছুটা বিলম্ব হয় বিধায় ফসলের আয়ুষ্কাল দীর্ঘায়িত হয়।

বীজের হার:

 

সারিতে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি একরে ২১ কেজি এবং ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে প্রতি একরে ২৭ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।

সারের পরিমান ও প্রয়োগ পদ্ধতি:

 

জমির উর্বরতা দেশের সব জায়গায় সমান নয়। তাই কৃষি পরিবেশ অঞ্চলভেদে সারের মাত্রা কম-বেশি হয়। সয়াবিন চাষের জন্য সাধারণভাবে অনুমোদিত সারের মাত্রা হলঃ একর প্রতি ইউরিয়া ২০-২৫ কেজি অথবা জীবানুসার প্রতি কেজি বীজের জন্য ৫০ গ্রাম, টিএসপি ৬০-৭০ কেজি, এমওপি ৩৫-৪০ কেজি, জিপসাম ৩০-৩৫ কেজি। প্রয়োজনে একরে ৩-৪ কেজি বোরিক এসিড সার প্রয়োগ করতে হবে। পঁচা গোবর বা কম্পোষ্ট সার প্রয়োগ করলে রাসায়নিক সার কম লাগবে। শেষ চাষের পূর্বে সব রাসায়নিক সার ছিটিয়ে মই দিয়ে মাটি সমান করতে হবে। 

সেচ ও নিস্কাশন:

 

বৃষ্টি না হলে প্রথম সেচ বীজ গজানোর ২০-৩০ দিন পর এবং দ্বিতীয় সেচ বীজ গজানোর ৫০-৫৫ দিন পর দিতে হবে। খরিফ-২ মৌসুমে সাধারণত কোন সেচের প্রয়োজন হয় না, বরং জমিতে পানি জমে গেলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আগাছা দমন এবং মালচিং:

 

চারা গজানোর ১৫-২০ দিনের মধ্যে আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন হলে পাতলা করে দিতে হবে, জাতভেদে সারিতে গাছ হতে গাছের দূরত্ব রাখতে হবে ১.৫-২.৫ ইঞ্চি। তবে প্রতি বর্গ মিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৫৫টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০টি গাছ রাখা উত্তম। রবি মৌসুমে গাছে ফুল ধরা এবং ফল বা শুঁটি ধরার সময় সম্পূরক সেচের প্রয়োজন হতে পারে।

বালাই ব্যবস্থাপনা:

 

বিছাপোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা: বিছাপোকা ও পাতা মোড়ানো পোকা সয়াবিনের মারাত্মক ক্ষতি করে। বিছাপোকা ডিম থেকে ফোটার পর ছোট অবস্থায় পোকাগুলো একস্থানে দলবদ্ধভাবে থাকে এবং পরবর্তীতে আক্রান্ত গাছের পাতা খেয়ে জালের মতো ঝাঁঝরা করে ফেলে। এ পোকা দমনের জন্য আক্রান্ত পাতা দেখে পোকাসহ পাতা তুলে পোকা মেরে ফেলতে হবে। পোকার আক্রমণ বেশি হলে সেভিন ৮৫ এসপি ৩৪ গ্রাম পাউডার প্রতি ১০ লিটার পানিতে অথবা এডভান্টেজ ২০ এসসি ৩০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।

কান্ডের মাছি পোকা: এ পোকার কীড়া কান্ড ছিদ্র করে ভিতরের নরম অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে আক্রান্ত গাছের অংশ বিশেষ অথবা সম্পূর্ণ গাছ দ্রুত মরে যায়। এ পোকার দ্বারা আক্রান্ত হলে ডায়াজিনন ৬০ ইসি ২৫-৩০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে আক্রান্ত জমিতে স্প্রে করতে হবে।

হলুদ মোজাইক ভাইরাস: সয়াবিনের সবুজ পত্রফলকের উপরিভাগে উজ্জ্বল সোনালী বা হলুদ রঙের চক্রাকার দাগের উপস্থিতি এ রোগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সুস্থ এবং রোগমুক্ত বীজ বপনের মাধ্যমে এ রোগের আক্রমণ অনেকটা কমানো যায়। উল্লেখ্য যে, বিনা উদ্ভাবিত ৭টি জাতই হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ প্রতিরোধী।

কান্ড পচা রোগ: মাটিতে অবস্থানকারী ছত্রাকের কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। আক্রান্ত গাছের পাতা হলুদ হওয়াসহ কান্ড ও মূলে কালো দাগ দেখা যায়। পরবর্তীতে আক্রান্ত গাছ ধীরে ধীরে শুকিয়ে মরে যায়। গভীর চাষ এবং জমি হতে ফসলের পরিত্যক্ত অংশ, আগাছা ও আবর্জনা পরিষ্কার করে এ রোগের উৎস নষ্ট করা যায়।

হেক্টর প্রতি ফলনঃ

 

রবি এবং খরিফ-২ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে ফলন যথাক্রমে ২.৬-৩.০ এবং ২.৮-৩.২ টন